সম্পাদকীয় কলাম
১ মে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা মে দিবস। এ দিনটি কেবল একটি দিবসের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদার সংগ্রামের এক গৌরবময় ইতিহাস। ১৮৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক আন্দোলন থেকে উদ্ভূত এই দিবস আজও শ্রমের ন্যায্য দাবি এবং সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
বাংলাদেশও শ্রমিক-শ্রেণির কঠোর পরিশ্রম ও ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে উন্নয়নের পথ অতিক্রম করছে। কৃষি থেকে শিল্প, গার্মেন্টস থেকে আইটি সেক্টর — প্রতিটি খাতে শ্রমজীবী মানুষের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু এখনও দেশের বহু শ্রমিক ন্যায্য মজুরি, কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা এবং মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। মে দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, কেবল উন্নয়নের পরিসংখ্যান বাড়ালেই চলবে না, শ্রমিকের জীবনের গুণগত পরিবর্তন আনাই প্রকৃত উন্নয়ন।
আজকের বাংলাদেশে শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন:
শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে ন্যায্য সমঝোতা,
সুষ্ঠু শ্রমনীতি কার্যকর করা,
শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিতকরণ,
নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলা এবং
সকল পর্যায়ে শ্রমিকদের সম্মান প্রদর্শন।
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে শ্রমের সংজ্ঞাও বদলাচ্ছে। অফিসের কর্মচারী থেকে শুরু করে ডিজিটাল উদ্যোক্তা, প্রত্যেকে কোনো না কোনোভাবে শ্রম দিচ্ছেন। তাই আজকের মে দিবসে আমাদের শপথ হোক— প্রতিটি শ্রমিক, প্রতিটি পরিশ্রমের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করা।
জাতি হিসেবে আমরা তখনই প্রকৃত সমৃদ্ধি অর্জন করবো, যখন কৃষক, মজুর, গার্মেন্টস শ্রমিক, নির্মাণকর্মী, সাংবাদিক, উদ্যোক্তা— প্রত্যেকের অধিকার সমান মর্যাদা পাবে। মে দিবস আমাদের আহ্বান জানায়, “শ্রমকে ভালোবাসো, শ্রমিককে সম্মান করো।”
শ্রমের মর্যাদায় এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।