বরুড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে আইন-শৃংখলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা-২০২৫ অনুষ্ঠিত
🖊️আবু ইউছুফ রাবেতঃ
শরতের আকাশে সাদা কাশফুল দোল খাচ্ছে, বাতাসে হালকা শীতলতা—এসেছে শারদীয় দুর্গাপূজার আগমনী সুর। বাংলার হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে এখন গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র এক অন্যরকম আবহ। পূজা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রাণস্পন্দন।
এই পূজাকে ঘিরে যেন কোনো ধরনের অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে কুমিল্লার বরুড়া থানায় অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ মতবিনিময় সভা। বরুড়া থানা প্রাঙ্গণে শনিবার দুপুরে আয়োজিত এ সভায় আইনশৃংখলা বাহিনী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা এবং সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী নাজমুল হক।
প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার, সদর দক্ষিণ সার্কেল মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ ফেরদৌস।
উক্ত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ওসি তদন্ত সঞ্জয় সরকার।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—
সাংবাদিক দিলীপ মজুমদার, সভাপতি কুমিল্লা প্রেসক্লাব
সৈয়দ জহিরুল হক স্বপন, সাধারণ সম্পাদক, বরুড়া উপজেলা বিএনপি
মাওলানা সাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা আমির, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, বরুড়া
বাবু দীপক ভৌমিক, সভাপতি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বরুড়া উপজেলা
ডা. তপন ভৌমিক, সভাপতি, পূজা উদযাপন পরিষদ, বরুড়া উপজেলা ও আহ্বায়ক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বরুড়া
রাজীব দে, সদস্য সচিব, পূজা উদযাপন পরিষদ, বরুড়া উপজেলা
তপন দত্ত, সাধারণ সম্পাদক, পূজা উদযাপন পরিষদ, বরুড়া উপজেলা
তাপস লাল দে, যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা
সভায় বক্তারা এক কণ্ঠে বলেন—দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, বরং সকলের দায়িত্ব। পূজামণ্ডপে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশ প্রশাসন সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় জনগণ মিলেমিশে নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলবেন।
প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ ফেরদৌস বলেন—
“বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। আমরা চাই, দুর্গোৎসব হোক শান্তি, আনন্দ ও ঐক্যের উৎসব। তাই পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, প্রশাসন ও জনগণ একসাথে কাজ করবে।”
সভা প্রাঙ্গণে সাজসজ্জা, ফুল আর প্রাণবন্ত আলোচনায় যেন এক ধরনের উৎসবমুখরতা তৈরি হয়। হিন্দু, মুসলিম, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক—সবাই মিলেমিশে এককথায় বার্তা দেন—“ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।”
বরুড়ার এই মতবিনিময় সভা প্রমাণ করে, দুর্গাপূজা আর কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়—এটি বাঙালি জীবনের অংশ, সংস্কৃতির প্রতীক, সম্প্রীতির বার্তা। আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রস্তুতি, স্থানীয় নেতাদের অঙ্গীকার এবং জনগণের ঐক্য নিশ্চিত করেছে যে, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ হবে শান্তিপূর্ণ, আনন্দঘন ও সবার অংশগ্রহণে একটি জাতীয় উৎসব।