শেখ পরিবারের ফেরাউনদের কাছে বাংলাদেশ বন্ধক দেওয়া হয় নাই।
——————-ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ,
মো. আলমগীর, জামালপুর।
এবি পার্টি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, আপনারা দেখেছেন জামালপুরে এই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ১৬ জন শহীদ তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এই লাল সবুজের পতাকাকে সারাদেশের মানুষের মতো করেই যে ভাবে উচ্চ কৃত করে দিলেন আজকে আমরা সেই ১৬ জন শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি সে সকল আহত ও উৎসাহ যোদ্ধাদেরকে যারা প্রতিবন্ধী হয়েছেন, হাত-পা হারিয়েছেন, ব্যপক ত্যাগস্বীকার করেছেন এবং ত্যাগস্বীকার করার মধ্যে দিয়ে যে বার্তা তারা আওয়ামী ও তাদের দোসরদেরকে দিয়েছেন যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোন আপোস হবে না। যতবারি আওয়ামী দালাল এবং দিল্লির দাসত্ব এইখানে চেপে বসবার চেষ্টা করবে ঠিক ততবারি বাংলার দামাল ছেলেরা আবু সাঈদ, মুগ্ধদের মতো ফিরে আসবে। বুক পেতে দিয়ে আবার লড়াই করে এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করবে লক্ষ লক্ষ যুবকরা। নতুন করে রাস্তায় প্রতিবাদের স্লোগান ধরবে। এই বাংলাদেশকে তারা নতুন করে স্বাধীন করে এই বার্তা দিবে যে শেখ পরিবারের ফেরাউনের কাছে বাংলাদেশ বন্ধক দেওয়া হয় নাই, শেখ হাসিনার কাছেও বাংলাদেশ বন্ধক দেওয়া হয় নাই, আওয়ামী লীগের কাছেও বন্ধক দেওয়া হয় নাই। যারা এই বাংলাদেশে ফেরাউনের রাজত্ব কায়েম করেছে ভবিষ্যতেও করতে চায় তাদেরকেও বার্তা দেওয়া হয়েছে, ফেরাউনের রাজবংশের শাসন বাংলাদেশে আর ফিরে আসবেনা। যতদিন এই দেশে মুগ্ধ, ওয়াসিম, নাহিয়ানদের মতো যুবকরা বেচে থাকবে ততদিন আমরা লড়াই করবো, ততদিন যুদ্ধ হবে, ততদিন লাল সবুজের পতাকা পতপত করে উড়বে কিন্তু এই লড়াই থেকে কোন আপোস হবে না। যেইটা জামালপুরবাসী জুন, জুলাই, আগস্টে প্রমাণ করেছে। যেইটা সারা বাংলাদেশ লড়াই করে ১৬ বছর ধরে বার বার প্রমাণ করেছে ভবিষ্যতেও প্রমাণ করবে ইনশাআল্লাহ।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের ফৌজদারি মোড়ে এবি পার্টির আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, যে বাংলাদেশ লড়াই করতে শিখেছে বছরের পর বছর, যে বাংলাদেশ লড়াই করতে শিখেছে আওয়ামী রাজবংশের বিরুদ্ধে, যে বাংলাদেশ ১৬ বছরে হার মানে নাই,সেই বাংলাদেশে যদি ভবিষ্যতে আবার কেউ ঔপনিবেশিক শাসন কায়েম করতে চায় সেই বাংলাদেশে যদি আবার কোন রাজবংশ এসে বাংলার হাট, ঘাট, মাঠ দখল করতে চায়, মনে করে রাজনৈতিক ব্যানারে নতুন করে চাঁদাবাজের সাম্ররাজ্য কায়েম করবে তাদেরকে বলছি ৩২ নম্বরে যে ঘটনাগুলো ঘটে গেছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নেন। বাংলাদেশ আগের জায়গায় নাই। রাজনৈতিক ব্যানারে বাসস্ট্যান্ড দখল করবেন, নদী দখল করবেন, অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বানাবেন, ব্রহ্মপুত্রকে হত্যা করবেন, সেই রাজনীতি বাংলাদেশে থাকবে না। ব্রহ্মপুত্রকে জীবিত করতে হবে। ব্রহ্মপুত্রের মধ্যে যত অবৈধ স্থাপনা আছে সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে হবে।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, জামালপুরের ডিসি এবং এসপিকে বলছি, অনতিবিলম্বে ব্রহ্মপুত্রের জায়গায় দখল করে যারা বিশ্ববিদ্যালয় করেছে ৩২ নম্বরের মতো বুলডোজার এনে ঐ বিশ্ববিদ্যালয় ভেঙ্গে দিবেন। এটা বাংলাদেশের সম্পত্তি। নদী দিয়ে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি হবে না। যদি বিশ্ববিদ্যালয় করতে হয় জমি কিনে অন্য জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় করেন। নদীকে হত্যা করে বাংলাদেশের প্রাণ প্রাকৃতিক পরিবেশকে হত্যা করে বাংলাদেশের সম্পদকে হত্যা করে বাংলাদেশের মাঠ এবং জেলে সম্পদায়ের জীবনকে হত্যা করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা করছে আপনাদের সাবধান করে দিচ্ছি এই বিশ্ববিদ্যালয় ব্রহ্মপুত্র নদীতে থাকতে পারবেনা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় কোন ফেরাউনের জন্ম হয় নাই, আমরা জন্ম হতে দিবো না। আপনারা চাঁদাবাজি করছেন। চাঁদাবাজি বন্ধ করেন। টেম্পুস্ট্যান্ড দখল করেছেন। টেম্পুস্ট্যান্ড দখল বন্ধ করেন। হাট, ঘাট, মাঠ ইজারা বন্ধ করে নতুন রাজনীতিতে ফিরে আসেন। যদি পুরাতন ধারায় রাজনীতি কন্টিনিউ করেন ৩২ নম্বরের মতো আপনাদের অবস্থাও আওয়ামী লীগের মতো হবে। চাঁদাবাজদের রাজনীতি বাংলাদেশে থাকবে না, জামালপুরে থাকবে না। চাঁদাবাজির রাজনীতি বন্ধ করে জনগণের রাজনীতি করেন। সেই রাজনীতি হচ্ছে আগামীদিনের রাজনীতি।
তিনি বিডিআরের উদ্দেশ্য করে বলেন, বিডিআর জোয়ান যারা পিলখানা গণহত্যায়, মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর জেলে ছিলেন তারা আমার সাথে দেখা করতে আসে। তারা আপনাদের জামালপুরের সন্তান। আপনারা জানেন এখনো ৬ শতর উপরে বিডিআর সদস্য বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় কারাগারে আছেন। তারা বছরের পর বছর জেল খেটেছেন। তারা জানেন না তাদের কি অপরাধ ছিল। তাদের অনেকের ৩৫ বছর চাকরি করার পরেও বেতন না পেয়ে, পেনশন না পেয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছেন। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলছি, উপদেষ্টাকে বলছি, বিডিআর রিলেটেড যে পিলখানা কমিশন হয়েছে তাদেরকে বলছি এসকল নিরপরাধ যারা ফৌজদারি অপরাধ করেন নাই, যারা বিদ্রোহের সাথে জড়িত ছিলেন না। সেই সকল জামালপুরবাসী বিডিআরের জোয়ান এবং সারা বাংলাদশে যে সকল বিডিআর সদস্য আছেন তাদের প্রতি আপনারা ইনসাফ করেন। নেজ্যতার ভিত্তিতে মিথ্যা মামলা তুলে নেন। তাদের চাকরি ফেরত দেন, পুনর্বহাল করেন। পেনশন ফিরিয়ে দেন। যেই বছর গুলো তিনি জেলে ছিলেন নিরপরাধের সাথে তার চাকরির বেতন গুলো ফিরাইয়া দেন। পরিবারকে পুনর্বাসন করেন। এই অরাজ্য আচরণ রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমরা গ্রহণযোগ্য মনে করিনা। তাই তদন্ত সাপেক্ষে যারা যারা ফৌজদারি অপরাধ করেন নাই তাদের সকল সুযোগ সুবিধা ফিরিয়ে দিয়ে এই জামালপুরের সন্তানদেরকে এবং সারা বাংলাদেশের হাজার হাজার বিডিআর জোয়ানকে তার নেয্য সন্মান এবং মর্যাদা ফিরিয়ে দিবেন সেটাই আমরা দাবি করছি।
এবি পার্টি জামালপুর জেলা শাখার আহবায়ক আইনজীবী ছানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার লিপসন মিয়ার সঞ্চালনায় জনসভা বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদি উজ্জামান খোকন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় এবি পার্টির আহবায়ক শাজাহান মল্লিক, এবি পার্টি জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম- আহবায়ক এস এম খালেক, জামালপুর যুব পার্টির আহবায়ক মো. শিহাব ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস কুদ্দুস তালুকদার, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) জামালপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি আইনজীবী মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
জনসভার পূর্বে ফৌজদারি মোড়ে এবি পার্টির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জনসভা শেষে শহরের বসাক মার্কেট এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
